Geomorphic Process Fold Part-II
Geomorphic Process Fold Part-II
পরিবর্তন হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোলের সিলেবাস । নতুন সিলেবাস অনুযায়ী সমগ্র উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোলকে চারটি সেমিস্টারে বিভক্ত করা হয়েছে, যেখানে একাদশ শ্রেণীতে দুটি এবং দ্বাদশ শ্রেণীতে দুটি সেমিস্টার অন্তর্ভুক্ত । উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোলের নতুন সিলেবাসের ভিত্তিতে ভূগোলের সেমিস্টার ভিত্তিক বিষয়বস্তুকে আলোচনা করার জন্য আমরা একাদশ ভূগোল নির্যাস : দ্বিতীয় সেমিস্টার বিভাগের সূচনা করি । এই বিভাগে এখন আমরা আলোচনা করবো একাদশ শ্রেণীর দ্বিতীয় সেমিস্টারের Physical Geography এর Unit-II এর Geomorphic Process অধ্যায় এর এর অন্তর্ভুক্ত টপিক Geomorphic Process Fold সম্পর্কে তৃতীয় অংশ। সমগ্র অধ্যায়টি বেশ কয়েকটি পর্বে শেষ হবে, তাই পরবর্তী পর্বটি পড়ার জন্য Next Part এ ক্লিক করো । তাহলে আর অপেক্ষা না করে চলো আমরা মূল বিষয়ে প্রবেশ করি ➦
Geomorphic Process Fold Part-II
➲ গ্রন্থি রেখার প্রকৃতির ভিত্তিতে (Based on nature of hing line) ভাঁজের প্রকার : গ্রন্থি রেখার প্রকৃতির ভিত্তিতে ভাঁজ কে তিন ভাগে ভাগ করা হয়, যথাঃ i. বেলনাকরা ভাঁজ (Cylindrical Fold), ii. অ-বেলনাকরা ভাঁজ (Non-Cylindrical Fold) এবং iii. শঙ্কুআকৃতির ভাঁজ (Conical Fold) ইত্যাদি ।
➦ যখন কোন শিলাস্তরের বাহু দুটি একই দিকে উল্টে গিয়ে একে অপরের সাথে সমান্তরালে অবস্থান করে এবং বাহুদুটির মিলিত অংশের গ্রন্থি রেখা ঋজুভাবে ভাঁজ অক্ষের সাথে সমান্তরালে অবস্থান করে তখন সেই প্রকার ভাঁজকে বেলনাকরা ভাঁজ বলে । ইহা দেখতে অনেকটা মোটা বই এর মতো ।
➦ যখন কোন শিলাস্তরের বাহু দুটি একই দিকে অবস্থান করলেও একে অপরের সমান্তরালে অবস্থান করে না এবং গ্রন্থি রেখা অর্ধ বৃত্তের মতো বাঁকানো ভাবে গঠিত হয় তখন সেই ভাঁজকে বলা হয় অ-বেলনাকরা ভাঁজ ।
➦ অ-বেলনাকরা ভাঁজ যখন শঙ্কুর আকৃতির মতো গঠিত হয় তখন সেই ভাঁজকে শঙ্কুআকৃতির ভাঁজ বলা হয় ।
➲ গ্রন্থির আকৃতির ভিত্তিতে (Based on shape of hinge) ভাঁজের প্রকার : গ্রন্থির আকৃতির ভিত্তিতে ভাঁজ কে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যথাঃ i. গোলাকার গ্রন্থি যুক্ত ভাঁজ (Round Hinged or Broad Hinged Fold), ii. সেভরণ ভাঁজ (Chevron Fold), iii. তীর মুখো ভাঁজ (Arrow-Head Fold) এবং iv. কাসপেট ভাঁজ (Cuspate Fold)
যেসমস্ত ভাঁজের গ্রন্থি থেকে পার্শ্ববর্তী পরিবর্তন বিন্দু পর্যন্ত অংশ গোল ভাবে গঠিত হয় সেগুলিকে গোলাকার বা বৃহৎ গ্রন্থি যুক্ত ভাঁজ বলা হয় । সোজা লিম্ব যুক্ত এবং সংকীর্ণ গ্রন্থি যুক্ত বর্ষার ফলার অগ্রভাগের আকৃতির ভাঁজকে বলা হয় সেভরণ ভাঁজ । যুক্ত রাজ্যের উত্তর কর্ণওয়াল এর মিলুক হ্যাভেন (Millook Haven) সেভরণ ভাঁজের প্রকৃষ্ট উদাহরন । বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী গোলাকার গ্রন্থি যুক্ত ভাঁজ ও সেভরণ ভাঁজ সম্পূর্ণ বিপরীত আকৃতির ।
➦ যখন কোন ভাঁজ আঁকাবাঁকা লিম্ব যুক্ত এবং সংকীর্ণ গ্রন্থি যুক্ত তীরের ফলার অগ্রভাগের আকৃতির সম্পন্ন হয় তখন সেই ভাঁজকে বলা হয় তীর মুখো ভাঁজ । এই ভাঁজ সেভরণ ভাঁজ এর মতো, এদের মূল পার্থক্য লিম্ব এর গঠনে পরিলক্ষিত হয় । যখন পাশাপশি অনেকগুলি গোলাকার গ্রন্থি যুক্ত ভাঁজ একে অপরের পাশাপশি অবস্থান করে এবং তাদের সংকীর্ণ লিম্ব একে বক্রাকরে অপরের লিম্বকে স্পর্শ করে থাকে তখন যে ভাঁজ গঠিত হয় তাকে বলা হয় কাসপেট ভাঁজ । নিউ মেক্সিকোর ক্যাট হিল আগ্নেয়গিরি ক্ষেত্রের লস লুনাস আগ্নেয়গিরি (Los Lunas Volcano) এর পৃষ্ঠদেশ কাসপেট ভাঁজের উদাহরন ।
➲ গ্রন্থির সংখ্যার ভিত্তিতে (Based on no of hinges) ভাঁজের প্রকার : গ্রন্থির সংখ্যার ভিত্তিতে ভাঁজ তিন প্রকারের, যথাঃ i. এক গ্রন্থি ভাঁজ (Single Hinged Fold), ii. অনুবন্ধী ভাঁজ (Conjugate Fold) এবং iii. বাক্স ভাঁজ (Box Fold) ।
➦ কোন ভাঁজ যখন দুটি পরিবর্তন বিন্দুর মাঝে একটি মাত্র গ্রন্থি নিয়ে গঠিত হয় তখন তাকে এক গ্রন্থি ভাঁজ বলা হয় । আবার যখন দুটি পরিবর্তন বিন্দুর মাঝে দুটি তীক্ষ গ্রন্থি নিয়ে গঠিত ভাঁজকে বলা হয় অনুবন্ধী ভাঁজ । অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের কুমা (Cooma) তে অনুবন্ধী ভাঁজের প্রচুর নিদর্শন রয়েছে ।
➦ আবার দুটি গ্রন্থি যুক্ত গোলাকার বা প্রশস্থ পৃষ্ঠদেশ সমন্বিত ভূমি ভাগের দুই প্রান্তদেশীয় গ্রন্থি থেকে একে অপরের অভিমুখে বাঁকানো লিম্ব যুক্ত ভাঁজকে বলা হয় বাক্স ভাঁজ । ইংল্যান্ডের কর্ণওয়াল এর Northcott Mouth বাক্স ভাঁজের প্রকৃষ্ট উদাহরন । এছাড়া ইতালির পূর্ব উপকূলে অবস্থিত Cingue Terre তে অনুবন্ধী ভাঁজ ও বাক্স ভাঁজের প্রচুর নিদর্শন দেখা যায় ।
➲ জ্যামিতিক উপাদানের ভিত্তিতে (Based on geometrical elements) ভাঁজের প্রকার : ব্রিটিশ ভূতাত্বিক তথা “Modern Structural Geology” এর জনক রামসে (John Graham Ramsay) 1967 সালে প্রকাশিত তার “Folding and Fracturing of Rocks” নামক গ্রন্থে তিনি Dip Isogons (গ্রন্থি পরিধি), Axial Plane Thickens (অক্ষ তলের প্রশস্থ) ও Orthogonal Thickens (সমকোণীয় প্রশস্থ) এই তিনটি জ্যামিতিক উপাদানের ভিত্তিতে প্রথম ভাঁজকে জ্যামিতিক ভাবে বিভাজিত করেন । তিনি জ্যামিতিকভাবে প্রাথমিক তিনটি প্রধান ভাঁজ ও তিনটি উপ ভাঁজের উল্লেখ করেন । প্রধান ভাঁজগুলি হলঃ i. প্রথম শ্রেণির ভাঁজ (Class 1 Folds), ii. দ্বিতীয় শ্রেণির ভাঁজ (Class 2 Folds) এবং iii. তৃতীয় শ্রেণির ভাঁজ (Class 3 Folds) । প্রথম শ্রেণির ভাঁজ (Class 1 Folds) কে তিনি আবার তিনটি উপবিভাগে বিভক্ত করেছেন, যথাঃ a) Class 1A Folds, b) Class 1B Folds এবং c) Class 1C Folds ।
একাদশ শ্রেণীর দুটি সেমিস্টারের In Details আলোচনা রয়েছে ইবুক দুটিতে 📥
♦️ইবুক : উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোল নির্যাস : একাদশ, প্রথম সেমিস্টার
♦️ইবুক : উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোল নির্যাস : একাদশ, দ্বিতীয় সেমিস্টার)
➦ যেসমস্ত ভাঁজের সমকোণীয় প্রশস্থতা গ্রন্থি পরিধির তুলনায় কম তাদের রামসে Class 1A Folds হিসাবে অভিহিত করেন । এই ধরনের ভাঁজকে Nevin 1931 সালে প্রথম Supratenuous Fold হিসাবে উল্লেখ করেছিলেন । যেসমস্ত ভাঁজের লিম্ব বরাবর সমকোণীয় প্রশস্থতা গ্রন্থি পরিধির সমান থাকে তাদের Ramsay, Class 1B Folds নামে অভিহিত করেন হিসাবে অভিহিত করেন । এই ধরনের ভাঁজ কে Van Hise 1896 সালে Paralal Fold এবং 1923 সালে Leith Concentric Fold নামে অভিহিত করেন । আবার যেসমস্ত ভাঁজের সমকোণীয় প্রশস্থতা গ্রন্থি পরিধির তুলনায় বেশি তাদের রামসে তাদের Class 1C Folds হিসাবে অভিহিত করেন ।
➦ যেসমস্ত ভাঁজের গ্রন্থি পরিধি (Isogons) অভিসারী প্রকৃতির অর্থাৎ গ্রন্থি অঞ্চলের বহিঃ বক্র তলের চাপ (Arc) অন্তঃস্থ বক্রতলের চাপের থেকে বড় সেই সমস্ত ভাঁজকে রামসে প্রথম শ্রেণির ভাঁজ হিসাবে অভিহিত করেছেন । আবার সমান্তরালে গ্রন্থি পরিধি যুক্ত ভাঁজকে দ্বিতীয় শ্রেণির ভাঁজ এবং প্রতিসারী প্রকৃতির অর্থাৎ গ্রন্থি অঞ্চলের বহিঃ বক্র তলের চাপ (Arc) অন্তঃস্থ বক্রতলের চাপের থেকে ছোট হলে সেই সমস্ত ভাঁজকে তৃতীয় শ্রেণির ভাঁজ হিসাবে উল্লেখ করেন ।
➲ ভাঁজের উপরিস্থাপনের ভিত্তিতে (Based on superposition of fold) ভাঁজের প্রকার : রামসে ও হুবের (Martin I. Hubber) 1983 সালে প্রকাশিত তাদের “The Techniques of Modern Structural Geology: Folds and Fractures” নামক গ্রন্থে দুটি ভাঁজের পারস্পরিক উপরিস্থাপনের ভিত্তিতে ভাঁজকে চার ভাগে বিভক্ত করেন, যথাঃ i. Superimposed Fold Type 0, ii. Superimposed Fold Type 1 বা Dome & Basin, ii. Superimposed Fold Type 2 বা Crescent/Mushroom Pattern Folds এবং iv. Superimposed Fold Type 3 বা Hook Shaped Fold ।
➲ ফ্ল্যুয়েটির বিভাজনে (Fluety classification of fold) ভাঁজের প্রকার : ফ্লুয়েটি (M. J Fluety) 1964 সালে প্রকাশিত তার “The Description of Folds” নামক গবেষণাপত্রে বিভিন্ন ভিত্তিতে ভাঁজকে শ্রেণিবিভক্ত করেছেন, এই ভিত্তিগুলি হলঃ i. ভাঁজ অক্ষের নিমজ্জনের পরিমাণের ভিত্তিতে (Based on amount of plunge of fold axis), ii. অক্ষ তলের নতির পরিমাণের ভিত্তিতে (Based on amount of dip of axial plan) এবং iii. অন্তর্বতী কোণের ভিত্তিতে (Based on interlimb angel) ।
➲ ভাঁজ অক্ষের নিমজ্জনের পরিমাণের ভিত্তিতে (Based on amount of plunge of fold axis) ফ্ল্যুয়েটি ভাঁজকে পাঁচ ভাগে বিভক্ত করেন, যথাঃ i. Subhorizontal Folds (অক্ষের নিমজ্জনের পরিমাণ 0-10 ডিগ্রির মধ্যে), ii. Gently Plunging Folds (অক্ষের নিমজ্জনের পরিমাণ 10-30 ডিগ্রির মধ্যে), iii. Moderately Plunging Folds (অক্ষের নিমজ্জনের পরিমাণ 30-60 ডিগ্রির মধ্যে), iv. Steeply Plunging Folds (অক্ষের নিমজ্জনের পরিমাণ 60-80 ডিগ্রির মধ্যে) এবং v. Sub-Vertical Folds (অক্ষের নিমজ্জনের পরিমাণ 80-90 ডিগ্রির মধ্যে) ।
➲ অক্ষ তলের নতির পরিমাণের ভিত্তিতে (Based on amount of dip of axial plan) ফ্ল্যুয়েটি ভাঁজ কে পাঁচ ভাগে বিভক্ত করেন, যথাঃ i. Upright Folds (নাতির মান 90-80 ডিগ্রি), ii. Steeply Inclined Folds (নাতির মান 80-60 ডিগ্রি), iii. Moderately Inclined Folds (নাতির মান 60-30 ডিগ্রি), iv. Gently Inclined Folds (নাতির মান 30-10 ডিগ্রি) এবং v. Recumbent Folds Inclined Folds (নাতির মান 10-0 ডিগ্রি) ।
➲ অন্তর্বতী কোণের ভিত্তিতে (Based on interlimb angel) ফ্ল্যুয়েটি ভাঁজকে ছয় ভাগে বিভক্ত করেন, যথাঃ i. Gentle Folds (interlimb angel 180-120 ডিগ্রির মধ্যে), ii. Open Folds (interlimb angel 120-70 ডিগ্রির মধ্যে), iii. Closed Folds (interlimb angel 70-30 ডিগ্রির মধ্যে), iv. Tight Folds (interlimb angel 30 ডিগ্রির কম এবং 120 ডিগ্রির অধিক), v. Isoclinical Folds (interlimb angel প্রায় আনুভূমিক), এবং vi. Fan Folds (interlimb angel ঋণাত্মক) ইত্যাদি । ➣ Next Part