Development of Soil Profile Part-II
Development of Soil Profile Part-II
পরিবর্তন হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোলের সিলেবাস । নতুন সিলেবাস অনুযায়ী সমগ্র উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোলকে চারটি সেমিস্টারে বিভক্ত করা হয়েছে, যেখানে একাদশ শ্রেণীতে দুটি এবং দ্বাদশ শ্রেণীতে দুটি সেমিস্টার অন্তর্ভুক্ত । উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোলের নতুন সিলেবাসের ভিত্তিতে ভূগোলের সেমিস্টার ভিত্তিক বিষয়বস্তুকে আলোচনা করার জন্য আমরা একাদশ ভূগোল নির্যাস : দ্বিতীয় সেমিস্টার বিভাগের সূচনা করি । এই বিভাগে এখন আমরা আলোচনা করবো একাদশ শ্রেণীর দ্বিতীয় সেমিস্টারের Physical Geography এর Unit-II এর Geomorphic Process অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত টপিক Development of Soil Profile সম্পর্কিত দ্বিতীয় অংশ । সমগ্র অধ্যায়টি বেশ কয়েকটি পর্বে শেষ হবে, তাই পরবর্তী পর্বটি পড়ার জন্য Next Part এ ক্লিক করো । তাহলে আর অপেক্ষা না করে চলো আমরা মূল বিষয়ে প্রবেশ করি ➦
মৃত্তিকা পরিলেখের বিকাশ (দ্বিতীয় অংশ)
➦ B স্তর (Horizon) : A হরাইজনের নিম্নে স্থিত খনিজ সমৃদ্ধ স্তরকে B হরাইজন বলে । A হরাইজন থেকে ধৌত পদার্থ B হরাইজনে এসে সঞ্চিত হয়, তাই একে সঞ্চয়ন (Illuvio) স্তরও বলা হয় । সঞ্চয়নের ফলে এই স্তর অপেক্ষাকৃত ঘনসন্নিবিষ্ঠ এবং সুক্ষ কণার আধিক্য যুক্ত হয়ে থাকায় একে সুক্ষ গ্রথনযুক্ত বলে চিহ্নিত করা হয় । আর্দ্র অঞ্চলে এই স্তরে লোহা ও অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড ও কাদার সিলিকেট এবং মরু ও মরুপ্রায় অঞ্চলে এই স্তরে ক্যালসিয়াম অক্সাইড, ক্যালসিয়াম সালফেট ও অন্যান্য লবণের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় । এই সমস্ত উপাদান A স্তর থেকে B স্তরে এসে সঞ্চিত হয়ে শুষ্ক অবস্থায় যে কঠিন স্তর গঠন করে তাকে Hard Pan বলা হয় । ল্যাটেরাইট মৃত্তিকায় এই স্তরকে L স্তর বলে অভিহিত করা হয় । B স্তরটিতে খনিজ ও জৈব পদার্থ সঞ্চিত থাকায় একে পুষ্টির মৌলের ভান্ডার হিসাবে শনাক্ত করা হয় । B স্তরে কাদার উপস্থিতি অধিক থাকলে তখন তাকে Bt স্তর বলা হয় এবং লোহা, ম্যাঙ্গানিজ ও অ্যালুমিনিয়ামের আধিক্য থাকলে তখন এই স্তরকে Bf স্তর নামে অভিহিত করা হয় ।
এই স্তরটিকে তিনটি উপ স্তরে ভাগ করা যায়, যথা – B1 Layer, B2 Layer ও B3 Layer ।
➦ B1 Layer : A হরাইজন ও B হরাইজন এর মধ্যে অবস্থিত B হরাইজনের বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ কিন্তু A হরাইজন থেকে সতন্ত্র বৈশিষ্ট্য যুক্ত উপস্তরকে B1 স্তর বলে । স্তরটি A ও B স্তরের সন্ধি স্তর হিসাবে বিবেচিত হয় এবং AB বা EB স্তর নামেও অভিহিত হয় । A হরাইজন থেকে বাহিত হিউমাস, লৌহ ও অ্যালুমিনিয়াম এই স্তরে দেখা যায় । সব মাটিতে এই স্তর থাকে না ।
➦ B2 Layer : B স্তরের দ্বিতীয় উপস্তর হল B2 স্তর । B1 স্তরের নিম্নে অবস্থিত উপরিস্থ স্তরগুলি থেকে অধিক মাত্রায় আগত কাদা কণা লৌহ ও অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড, হাইড্রো অক্সাইড, ক্যালসিয়াম কার্বনেট, ক্যালসিয়াম সালফেট সমৃদ্ধ গাঢ় রঙের স্তরটিকে B2 স্তর বলে । স্তেপ অঞ্চলের মৃত্তিকায় এই স্তরে কার্বনেটের সঞ্চয় ঘটে । পডজল মৃত্তিকায় কর্দমকণা, লোহা, অ্যালুমিনিয়াম এবং হাইড্রাস অক্সাইড জমা হয়ে Hard Pan গঠণ করে । ঘনসন্নিবিষ্ট গ্রথন যুক্ত এই উপস্তরকে প্রকৃত B স্তর ধরা হয় ।
➦ B3 Layer : B স্তরের দ্বিতীয় উপস্তর হল B2 স্তর । B2 স্তরের নিম্নে B ও C হরাইজনের মধ্যবর্তী স্তর হল এটি, যার বৈশিষ্ট্য B ও C হরাইজনের সন্মিলিত । B2 স্তরের সঞ্চয়ন অনেক সময় এই স্তর পর্যন্ত পৌঁছে যায় । তবে প্রতিটি মাটিতে এই স্তর দেখা যায় না ।
একাদশ শ্রেণীর দুটি সেমিস্টারের In Details আলোচনা রয়েছে ইবুক দুটিতে 📥
♦️ইবুক : উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোল নির্যাস : একাদশ, প্রথম সেমিস্টার
♦️ইবুক : উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোল নির্যাস : একাদশ, দ্বিতীয় সেমিস্টার)
➦ C. স্তর (Horizon) : B হরাইজনের নিম্নে এবং মূল শিলার ওপরে আবহবিকারের ফলে উৎপন্ন বিভিন্ন আকৃতির পাথরের টুকরো দ্বারা গঠিত অংশ হল C স্তর । জীবাণু বা অন্য কোন বিষয়ের প্রভাব এই স্তরে অনুপস্থিত এবং জৈবিক ক্রিয়াগুলি তেমন সক্রিয় নয় ফলে স্তরটি হিউমাস বিহীন একটি স্তর বলে বিবেচিত হয় । কাঁকর বা অন্যান্য কণার প্রলেপ রুপে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যৌগের সঞ্চয় এই স্তরে দেখা যায় । স্তরটিতে ব্লক বা প্রিজমের ন্যায় গঠনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় না । স্তরটি মাত্র কয়েক সেমিঃ পুরু হয় এবং জনক শিলা ও মৃত্তিকার সংযোগসাধক স্তর হিসাবে বিবেচিত হয়।
➦ C স্তরের উপস্তর : C স্তরকে সাধারণতঃ C1 Layer, C2 Layer এই দুটি উপস্তরে বিভক্ত করা হয়ে থাকে । প্রথম স্তরটি সম্পূর্ণ বিচূর্ণীভূত শিলা দ্বারা এবং দ্বিতীয় স্তরটি আংশিক বিচূর্ণীভূত শিলা দ্বারা গঠিত । কোন কোন ক্ষেত্রে C3 Layer দেখা যায় । গ্লেই (Glei) মাটিতে এই অতিরিক্ত স্তরটিকে Cg স্তর নামে অভিহিত করা হয় । আবার ক্যালসিয়াম কার্বনেট ও ক্যালসিয়াম সালফেটের সঞ্চয়ের ভিত্তিতে অতিরিক্ত স্তরটিকে CCa এবং CCs নামে অভিহিত করা হয় ।
☛ R স্তর (Horizon) : শিলা মৃত্তিকা গঠণ প্রকৃয়ায় উৎপন্ন অপরিবর্তিত স্তর হল R স্তর । ‘R’ হরাইজন প্রকৃত পক্ষে অবিকৃত আদি ভূমি-শিলাকে নির্দেশ করে । C স্তরের নিচে এই স্তরের অবস্থান । এই স্তরে স্বল্প কিছু ফাটলের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও স্তরটি আবহবিকারগ্রস্ত নয় । পূর্বে এই স্তরকে D স্তর নামে অভিহিত করা হত । ইউরোপে এই স্তরকে D স্তর হিসাবেই ধরা হয় । পিট ও বগ মৃত্তিকায় একটি বিশেষ মৃত্তিকা স্তর রুপে একে চিহ্নিত করা হয় ‘L’ দ্বারা ।
☛ কর্তিত পরিলেখ (Truncated Profile) : ভূআলোড়নের ফলে ভূভাগের উল্লম্ব উত্থান ঘটলে মাটির পরিলেখের উপরিস্তর দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, এই অবস্থায় এক বা একাধিক স্তর বিহীন মৃত্তিকা পরিলেখকে বলা হয় কর্তিত পরিলেখ । এক্ষেত্রে A স্তরের পরিবর্তে B স্তর বা A ও B স্তরের পরিবর্তে C স্তর প্রথমিক স্তর হিসাবে ভূপৃষ্ঠে উন্মুখ থাকে । উঃ-পূর্ব পোল্যান্ড এর মোরাইনিক (Morainic) অঞ্চলে এই ধরনের মৃত্তিকা পরিলেখ দেখা যায় ।
☛ সোলাম (Solum) : এক কথায় মাটির দুটি প্রধান স্তর A ও B কে একত্রে সোলাম বলা হয় । মৃত্তিকার A ও B স্তরে মৃত্তিকা গঠনের সমস্ত প্রক্রিয়া সক্রিয় থাকে এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীর অস্তিত্ব সীমাবদ্ধ থাকে এরূপ নরম, শিথিল, ঝুরঝুরে ও হিউমাস সমৃদ্ধ স্তরকে সোলাম বলা হয় । এই স্তরে মাটি গঠনের সমস্ত প্রক্রিয়া কার্যকর হয় । ল্যাটিন শব্দ “Solum” এর অর্থ হলঃ “floor” ।
☛ মনোলিথ (Soil Monolith) : মৃত্তিকার পরিলেখ গঠনের প্রথমিক প্রস্তুতি পর্যায়কে বলা হয় মনোলিথ । মৃত্তিকা চিহ্নিতকরণের ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব সর্বাধিক । মনোলিথ তার প্রাকৃতিক অবস্থানে মাটির উল্লম্ব স্লাইস উপস্থাপন করে থাকে । ইহা পাতলা স্তর বিশিষ্ট এক বিশেষ স্তর সৃষ্টি করে । স্তরটির গভীরতা হয় 2.5 সেমিঃ বা তারও কম ।
☛ মৃত্তিকা ক্যাটেনা (Soil Catena) : ল্যাটিন শব্দ ‘ক্যাটেনা’ বলতে বোঝায় ‘Chain’ বা ‘শৃঙ্খল’ । একটি নির্দিষ্ট প্রাকৃতিক ঢাল বরাবর যখন মাটিগুলি পর পর নিজেদের মধ্যে এবং ভূপ্রকৃতির সাথে সম্পর্কের ভিত্তিতে গঠিত হয় তখন তাকে মাটির ক্যাটেনা বলে । এক কথায় মাটির ক্যাটেনা হল ভূপ্রাকৃতিক বিন্যাস । অস্ট্রেলিয়ার ভূবিজ্ঞানী G. Milne (1935) ‘ক্যাটেনা’ ধারণাটির উদ্ভাবক ।