Geography in Indian Education Systems
Geography in Indian Education Systems
পরিবর্তন হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোলের সিলেবাস । নতুন সিলেবাস অনুযায়ী সমগ্র উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোলকে চারটি সেমিস্টারে বিভক্ত করা হয়েছে, যেখানে একাদশ শ্রেণীতে দুটি এবং দ্বাদশ শ্রেণীতে দুটি সেমিস্টার অন্তর্ভুক্ত । উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোলের নতুন সিলেবাসের ভিত্তিতে ভূগোলের সেমিস্টার ভিত্তিক বিষয়বস্তুকে আলোচনা করার জন্য আমরা একাদশ ভূগোল নির্যাস : প্রথম সেমিস্টার বিভাগের সূচনা করি । এই বিভাগে এখন আমরা আলোচনা করবো একাদশ শ্রেণীর Physical Geography এর Unit-I এর Geography as a discipline অধ্যায় এর Geography in Indian Education Systems সম্পর্কে । তাহলে আর অপেক্ষা না করে চলো আমরা মূল বিষয়ে প্রবেশ করি ➦
Geography in Indian Education Systems //ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ভূগোল
☙ ভারতীয় প্রেক্ষাপটে ভূগোলের উত্থান : প্রাচীন ভারতীয় শাস্ত্র “ভগবৎ পুরাণে” ভূগোল শব্দের অনুসন্ধান পাওয়া যায়, অষ্টম শতকে ভারতের বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় ‘Bhugol‘ বা ‘Bhoogol‘ শব্দটি সংস্কৃত ভাষা থেকে গৃহীত হয় । ভারতীয় ভূগোলের বিকাশ পর্যায়কে চারটি পর্যায়ে ভাগ করা যেতে পারে, যথাঃ i. প্রাচীন পর্যায় (Ancient Stage, ii. মধ্যবর্তী পর্যায় (Middle Age), iii. ঔপনিবেশিক পর্যায় (Colonial Period) এবং iv. স্বাধীনতা পরবর্তী পর্যায় (Post Independent Period) ইত্যাদি ।
“EVOLUTION OF MODERN GEOGRAPHICAL THINKING AND DISCIPLINARY TRENDS IN INDIA” নামক আর্টিকেলে (2013) ললিতা রানা (Dr. Lalita Rana) স্বাধীনতা পরবর্তী পর্যায় এর ভারতীয় ভৌগোলিক অগ্রগতিকে চারটি পর্যায়ে ভাগ করেছেন, যথাঃ i. The Formative Stage: Pre-1950s; ii. The Informative Stage: The 1950s; iii. The Confirmative Stage: The 1960s; এবং iv. The Reformative Stage: Since 1971.
বর্তমান ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় মূল স্রোতের এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পাঠ্য বিষয় হল ‘ভূগোল’ । কিন্তু ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ভূগোল বিষয়ের গুরুত্ব বিংশ শতকের প্রারম্ভে ছিল প্রায় ‘না’ বরাবর । 1926 সালে চেন্নাইএর মাদ্রাস ইউনিভর্সিটি তে Indian Geographical Society স্থাপিত হয় । চল্লিশের দশকে জেড. আর. খাঁ দ্বারা আলিগড়ে ভূগোলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয় । 1941 সালে এস.পি. চ্যাটার্জী দ্বারা কলকাতায় ভূগোলের অধ্যায়ন আরম্ভ হয় । এরপর 1946 এ বারাণসী, 1948 এ পাঞ্জাব, এলাহাবাদ ও মাদ্রাস এবং 1949 এ পাটনাতে স্নাতক স্তরে ভূগোলের অধ্যায়ন আরম্ভ হলে ভূগোলের গুরুত্ব ক্রমশঃ বৃদ্ধি পেতে থাকে । ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ভূগোলের বিকাশের পিছনে এস.পি. চ্যাটার্জী, এস.এল. ছিব্বর, আর.এন. দুবে, এস.এল. দুগ্গল, সুব্রামনিয়াম এর অবদান অনবদ্য রয়েছে । চল্লিশের দশকেই আলীগড় মুসলিম সোসাইটি (1935) Geographical Society of India (1933) এর মতো প্রতিষ্টানগুলি গড়ে ওঠে । 1951-70 এই দুই দশকে ভূগোলের গুরুত্ব আরো বিশ্লেষণাত্মক হয়ে ওঠে । 1951 পর্যন্ত ভারতে মাত্র 15 টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্নাতকোত্তরে ভূগোল অধ্যায়ন হত যা 1970 এ দ্বিগুণ হয়ে 30 এ পৌঁছে । এই দুই দশক পর্যায় কালে ভূগোল বিষয়ের পথপ্রদর্শক ছিলেন মুজাফফর আলী, এইচ.বি.দাস, পি. দয়াল, এস.আর. তিওয়ারী, এ.এন. ভট্টাচার্য্য, ইন্দ্র পাল, প্রকাশ রাও, আর.এল. সিং প্রমূখ ভূগোলবেত্তা । 1971 থেকে 2000 পর্যন্ত এই তিন দশকে খুব দ্রুত ভূগোলের বিকাশ ঘটে । ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ভূগোল অধ্যায়নের জন্য তীব্র গতিতে স্নাতকোত্তর বিভাগের স্থাপনা হয় । 1990 এ দেশে 75 এর বেশী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্নাতকোত্তর বিভাগে ভূগোলের অধ্যায়ন হতো । এই তিন দশক সময়কালে যুক্তিপূর্ণ ও বৈজ্ঞানিক ভূগোলের বিকাশ ঘটে । ভূগোল চিন্তার বিকাশে আর.পি. মিশ্র, আর. রামচন্দ্রন, এস.এল. ভাট. প্রকাশ রাও ভূগোলে ‘মাত্রিক বিপ্লবের’ বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোল নির্যাস : একাদশ, প্রথম সেমিস্টার
☙ ভারতীয় বিদ্যালয় ব্যবস্থায় ভূগোল অধ্যয়ন : প্রাক-ব্রিটিশ ভারতে ভৌগলিক জ্ঞান বিদ্যমান থাকলেও প্রথাগতভাবে ভূগোলের শিক্ষা বা অধ্যয়নের একটি কোর্স হিসাবে রূপ নিয়েছিল বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ব্রিটিশদের অধীনে । বৃটিশ শাসনকালে ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ভূগোল বিষয় অধ্যয়ন প্রবর্তনের মুখ্য কারণ ছিল ব্যবসা ও বানিজ্য সম্প্রসারণ করা এবং জরিপের মাধ্যমে সম্পদের নির্দিষ্ট মানচিত্র প্রস্তুত করা । ভারতে বিদ্যালয় স্তরে পাটিগণিত এবং ইংরাজি বিষয়ের সাথে বৃটিশরা ভূগোলের শিক্ষা আরম্ভ করে ।
1966 সালে ভারতীয় বিজ্ঞানী কোঠারী (Daulat Singh Kothari) এর নেতৃত্বে কোঠারী কমিশন তার “Education And National Development” – 1964–66 রিপোর্টে বিদ্যালয় পাঠক্রমে সমাজবিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত বিষয় হিসাবে ভূগোল অধ্যয়নকে বাধ্যতামূলক হিসাবে উল্লেখ করেন । ফলে পাঠ্য বিষয় হিসাবে এই সময়ে ভূগোলের নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রম (Syllabuses) গঠিত হয়। ভূগোলকে সমাজবিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত স্বতন্ত্র বিষয় হিসাবে উপস্থাপনের মূলে কোঠারী কমিশনের মূল লক্ষ্য ছিল জাতীয় চেতনা, সহনশীলতা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার প্রসারের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো । তৎকালীন 8+3 শিক্ষা স্তরে 1976 সাল পর্যন্ত ভারতে বিদ্যালয় স্তরে শিক্ষার্থীরা নবম শ্রেণি থেকে ভূগোল বিষয় স্বৈচ্ছিক বিষয় হিসাবে অধ্যয়ন করতো । 1977 সালে 8+2+2 শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের পর তৃতীয় শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সমাজ বিজ্ঞানের উপাদান হিসাবে ভূগোলের পঠনপাঠন আরম্ভ হয় । National Curriculum – 1977 অনুযায়ী ভারতে বিদ্যালয় স্তরে ভূগোল পঠনপাঠন দুইটি পর্যায়ে বিভক্ত ছিল, এই পর্যায়দুটি হলঃ তৃতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি এবং ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি । National Curriculum – 1977 অনুযায়ী তৃতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ভূগোল পঠনপাঠনের মাধ্যমে পরিবেশ বিদ্যার জ্ঞান প্রদান করা হত । ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ভূগোল বিষয়টি নির্দিষ্ট শৃঙ্খলাবদ্ধ পদ্ধতির মাধ্যমে সামাজিক বিজ্ঞান পাঠ্যক্রমের অংশ হিসাবে পড়ানো হত ।
1986 সালের National Curriculum অনুযায়ী বিদ্যালয় স্তরে ভূগোল শিক্ষায় ভূগোলের ক্ষেত্র এবং সূচীপত্র এর পরিবর্তন ঘটে । এই সময় ভূগোল বিষয়ে আঞ্চলিক এবং অর্থনৈতিক ভূগোলের আলোচনা আরম্ভ হয় । 1986 সালের National Curriculum অনুযায়ী উচ্চ প্রাথমিক স্তরে ভূগোল পাঠক্রমে আলোচনা ভিত্তিক বিশ্ব ভূগোল সংযুক্ত হয় । এই অংশে বিভিন্ন মহাদেশের কিছু দেশের আলোচনা যুক্ত হয় ।
National Curriculum 1999 এ ভূগোল বিষয়ের ক্ষেত্রে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন সাধিত হয়, যথাঃ i. সামাজিক বিজ্ঞানের আলোচনা পদ্ধতি Disciplinary Approaches থেকে Thematically Integrated Approach পদ্ধতিতে পরিবর্তিত হয় । ii. আঞ্চলিক এবং বিশ্ব ভূগোলের ক্ষেত্রে বর্ণনামূলক আলোচনার পরিবর্তে অনুসন্ধানমূলক দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ ঘটে । iii. ভূগোলকে শিক্ষার্থীদের কাছে আকর্ষণীয় করতে বৃত্তিমূলক বিষয় হিসাবে উপস্থাপন করা হয় ।
2020 সালের জাতীয় পাঠ্যক্রমে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ভূগোল বিষয়কে তিনটি প্রধান ক্ষেত্রে বিভক্ত করে পাঠ্য বিষয়বস্তু উপস্থাপনের কথা বলা হয়েছে ।
Pingback: Aim and Object Geography Education - নির্যাস.ইন