উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোল নির্যাসএকাদশ ভূগোল নির্যাস : দ্বিতীয় সেমিস্টার

Scope and Content of Geography

Scope and Content of Geography

পরিবর্তন হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোলের সিলেবাস । নতুন সিলেবাস অনুযায়ী সমগ্র উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোলকে চারটি সেমিস্টারে বিভক্ত করা হয়েছে, যেখানে একাদশ শ্রেণীতে দুটি এবং দ্বাদশ শ্রেণীতে দুটি সেমিস্টার অন্তর্ভুক্ত । উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোলের নতুন সিলেবাসের ভিত্তিতে ভূগোলের সেমিস্টার ভিত্তিক বিষয়বস্তুকে আলোচনা করার জন্য আমরা একাদশ ভূগোল নির্যাস : প্রথম সেমিস্টার বিভাগের সূচনা করি । এই বিভাগে এখন আমরা আলোচনা করবো একাদশ শ্রেণীর Physical Geography এর Unit-I এর Geography as a discipline অধ্যায় এর Scope and Content of Geography সম্পর্কে । তাহলে আর অপেক্ষা না করে চলো আমরা মূল বিষয়ে প্রবেশ করি ➦

Scope and Content of Geography


Scope and Content of Geography

ভূগোলের পরিধি (Scope) : ভূগোলের পরিধি যে ঠিক চিহ্নিত করা সম্ভব তা নিয়ে ভৌগোলিক দের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে । হিপোক্র্যাটস (Hippocrates) এর যুগ থেকে মহান পণ্ডিতদের অধিকাংশ ভূগোলের বিষয়বস্তর পরিধি হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ‘মানুষ ও পরিবেশের বহু বিচিত্র উপাদানের মধ্যে সম্পর্ক’, আজকের দিনের ভৌগলিকদের বক্তব্যের সারাংশও তাই । বিষয়বস্তুর দুটি প্রধান অংশ প্রাকৃতিক পরিবেশ ও মানব গোষ্ঠী । প্রাকৃতিক পরিবেশ তার উৎপত্তি, আকৃতি ও পরিবর্তনশীলতা নিয়ে জটিল এক বিষয়বস্ত; মানুষ ও তাই । প্রাকৃতিক পরিবেশ ও মানব গোষ্ঠীর এই পারষ্পরিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া সমীক্ষা করে ভূগোল ।
➮ ব্যপক বা বিস্তৃত ভাবে ভূগোলের পরিধি হল :
i. ভূগোল একাধারে পৃথিবীর পার্থিব ভৌতিক বিষয়বস্তুর প্রাকৃতিক পরিবেশ ও মানবীয় পরিবেশের পরিবর্তনের বিভিন্ন দিকগুলি সমন্ধে আলোচনা করে । ভূগোল ছাড়া এদের বা এদের ছাড়া ভূগোলকে বোঝা অসম্ভব ।
ii. ভূগোল পৃথিবীর বিভিন্ন ভৌগোলিক অবস্থানের নৈসর্গিক, পার্থিব এবং মানবীয় বিষয়বস্তু সম্পর্কে দার্শনিক অনুসন্ধিৎসুক অভিজ্ঞতা কে উপস্থাপনা করা l
iii. বিভিন্ন প্রকারের ভূগোলে বিভিন্ন ভাবে মানব – প্রকৃতির আন্তঃসম্পর্ক পৃথিবীর বিভিন্ন ভূপ্রকৃতির নিরিখে আলোচনা করা হয় ।
iv. Geocratic type Geography তে একটি নির্দিষ্ট এলাকার জীব গোষ্ঠীর ক্রীড়া ক্ষেত্র হিসাবে বিশ্ব-প্রকৃতিকে উপস্থাপন করে দেখানো হয় ।
v. Theocratic type Geography তে পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠে অবস্থিত বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক উপাদানের পারস্পরিক সম্পর্কের বোঝাপড়ার দিকগুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হয় ।
vi. Weocratic type Geography তে প্রকৃতিকে দাতা বা সম্ভাবনার আধার হিসাবে ধরে নিয়ে মানুষের ইচ্ছা বা অনিচ্ছার উপর জোর দেওয়া হয়েছে ।
vii. বিভিন্ন ধরনের দৈশিক ধারণা, তার বন্টন এবং মানবীয় গুণাবলীর উপর ভিত্তি করে ঐ ধারণার ব্যবহারিক দিকগুলো সমন্ধে ভূগোলে আলোচনা করা হয় ।
viii. দৈশিক আচরণ সংক্রান্ত সূত্র গঠণ, দৈশিক গঠণ, সংগঠন ব্যখ্যাকারী মডেল নির্মাণ ক্ষেত্র হিসাবে ভূগোল মূল সূচক।
ix. মানুষ ও প্রাকৃতিক পরিবেশের একে অপরের উপর পারস্পরিক প্রভাব এবং বিভিন্ন সামাজিক, আর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক পরিকল্পনা; তার যথার্থতা বাস্তবায়িতা এবং উপযোগিতা সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচারবিশ্লেষণ করে ভূগোল।
x. ভূপৃষ্ঠের প্রতিটি অংশের প্রতিটি বিষয়ের পার্থক্য সমীক্ষা করে বৈচিত্র ও সমাহারগুলিকে বর্ণনা ও ব্যাখ্যার মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ের সমন্বয়ের দিক আলোচনা করে ভূগোল ।
সুতরাং ভূগোলের পরিধি একাধারে প্রাকৃতিক ও সামাজিক বিজ্ঞানের মধ্যে বিস্তৃত । সাময়িক বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভূগোলের সংজ্ঞা যেমন যেমন বদলে গেছে তেমন তেমন ভূগোলের পরিধিও বিস্তৃত হয়েছে ।

উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোল নির্যাস : একাদশ, প্রথম সেমিস্টার

☛ ভূগোলের বিষয়বস্তু (Contents) : পরিবর্তনশীল এই বিষয়ের সূচীপত্র হিসেবে কয়েকটি বিশেষ ধারণার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়, যেমনঃ
i. পৃথিবী পৃষ্ঠ (The Earth’s Surface) : পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের গঠণ, উৎপত্তি ও ভূপৃষ্ঠে ঘটে চলা বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক ঘটনাবলীকে পর্যবেক্ষণ, বিশ্লেষণ ও পরীক্ষণ এবং তার নিরীখে একটি নির্দিষ্ট সিধান্তে এসে পর্যলোচনা করা হয় ভূগোলে ।
ii. স্থানের ধারণা (Concept Of Location) : ভূপৃষ্ঠের কোন নির্দিষ্ট স্থানের অক্ষাংশীয়, দ্রাঘিমা গত, মহাদেশীয়, দৈশিক বা জলবায়ু অঞ্চলের অবস্থান সম্পর্কে ভূগোল আলোচনা করে ।
iii. স্থানিক বিতরণের ধারণা (Concept Of Spatial Distribution) : ভূগোলে দেশ বলতে বোঝায় বাস্তব, সুসংহত, মিশ্র, চির পরিবর্তনশীল এবং যাকে দেখা যায়, মাপা যায় ও অনুভব করা যায় এমন পার্থিব ক্ষেত্র । ভূগোলে এরুপ দেশের অক্ষাংশীয়, দ্রাঘিমাগত এবং মহাদেশীয় বন্টন সম্পর্কে আলোচনা করা হয় ।
iv. পরিবর্তনের ধারণা (Concept Of Transformation) : ভূগোলে আলোচিত বিভিন্ন দেশের প্রাথমিক দুটি উপাদান যথা মানুষ ও প্রকৃতি কিভাবে একে অপরের সাপেক্ষে নিজেকে পরিবর্তনে সক্ষম তা আলোচনা করা হয় ।
v. অঞ্চলের ধারণা (Concept Of Region) : এক বা একাধিক সমধর্মী বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন দৈশিক একককে বলা হয় অঞ্চল । ভূগোলে অঞ্চলের গঠণ, সামাজিক -আর্থনৈতিক -সাংস্কৃতিক কার্যাবলী প্রভৃতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয় ।
vi. সময়ের ধারণা (Concept Of Time) : ভূগোলে প্রতিটি বিষয় সমীক্ষা করার সময়ে সময় বা কালের ধারণা গুরুত্বপূর্ণ । কালের সাপেক্ষে কোন পার্থিব অংশের ভূ – দৃশ্যের পরিবর্তন, জীবজগতের পরিবর্তন, জলবায়ুর পরিবর্তন প্রভৃতি কিভাবে ঘটে বা কেনো ঘটে তা পর্যলোচনা করা হয় ।
vii. মানাঙ্কনের ধারণা (Concept Of Scale) : ভূগোলে স্কেলের ধারণার মাধ্যমে মানচিত্র উপস্থাপন, অতীত কালের ভৌগলিক অবস্থা ও অবস্থান, জলবায়ু , শিলা ও জীবজগতের গঠণ প্রভৃতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয় ।


← পূর্ববর্তী পোস্ট : বিষয় হিসাবে ভূগোল

One thought on “Scope and Content of Geography

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page