Geomorphic Hazard SLST Geography Special
Geomorphic Hazard SLST Geography Special
WB SSC SLST এর বিজ্ঞপ্তি শুধু সময়ের অপেক্ষা । অনেকেই আরম্ভ করে দিয়েছেন প্রস্তুতি । কেনোই বা আরম্ভ করবেন না । চরম প্রতিযোগিতাপূর্ণ ক্ষেত্রে চুপিসারে প্রস্তুতি নিয়ে নিজেকে যতোটা এগিয়ে রাখা যায় ততই নিজের লাভ । অনেকেই আবার অপেক্ষা করছেন বিজ্ঞপ্তির জন্য । বিজ্ঞপ্তি বেরোলে আরম্ভ করবো এই মনোভাব কিন্তু আপনাকে অনেকটাই পিছিয়ে নিয়ে যেতে পারে । তাই টপিক ধরে ধরে এক্ষুনি আরম্ভ করুন প্রস্তুতি । আপনার প্রস্তুতি কে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমাদের SLST Geography বিভাগে নিয়মিত নজর রাখুন । আমরা নিরন্তর মক টেস্ট ও টপিক আলোচনা করে চলেছি । এখন আমরা Geomorphic Hazard SLST Geography Special নামক পোস্টে Geomorphology এর গুরুত্বপূর্ণ টপিক ভূতাত্ত্বিক দুর্যোগ নামক টপিকটি বিশদে আলোচনা করবো ।
➣ Join : Our Telegram Channel ☛ Bhugolika-Niryas
Topic : Geomorphic Hazard
☛ দুর্যোগ (Hazard) : প্রকৃতির যেসমস্ত ঘটনা আকস্মিকভাবে ঘটে স্বাভাবিক স্থিতিশীল অবস্থার পরিবর্তনের মাধ্যমে জীবজগৎ প্রভাবিতকরে সেই ঘটনাগুলিকে বলা হয় দুর্যোগ ।
অন্যভাবে বলা যায় যেসমস্ত ঘটনা আকস্মিকভাবে ঘটে বা কোন ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে সংঘটিত হতে হতে আকস্মিকতার অবস্থা সৃষ্টি করে কোন ভৌগোলিক ক্ষেত্রের প্রাকৃতিক, সাংস্কৃতিক তথা অর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যপক পরিবর্তন সাধন করে সেই ঘটনা বা ঘটনাগুলিকে বলা হয় দুর্যোগ ।
উইকিপিডিয়া অনুযায়ী – “A hazard is an agent that can cause harm or damage to humans, property, or the environment.”
CBSE এর একাদশ শ্রেণির পাঠ্য পুস্তকে Hazard এর সংজ্ঞা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে “A dangerous condition or event, that threat or have the potential for causing injury to life or damage to property or the environment.”
ইংরাজি “Hazard” শব্দটি প্রাচীন ফরাসি শব্দ “Hasard” থেকে উদ্ভুত হয়েছে, যার আক্ষরিক অর্থ হল “Game of chance played with dice” অর্থাৎ “পাশা দ্বারা খেলার সুযোগ“, যে শব্দটি 1540 এর দশকে ইংরাজিতে “Chance of loss or harm, risk” অর্থাৎ “হারানো বা ক্ষতির সম্ভাবনা বা ঝুঁকি” অর্থে ব্যবহার হয় । অর্থাৎ “Hazard” বলতে বোঝায় কোন মুহূর্তে কোনকিছু দ্বারা ক্ষতির সম্ভাবনা কে । আবার “দুর্যোগ” শব্দটি সংস্কৃত ‘দুঃ’ উপসর্গের সাথে ‘যোগ’ শব্দ যুক্ত হয়ে উৎপত্তি লাভ করেছে ‘দুঃ’ শব্দের অর্থ ‘খারাপ‘ ‘যোগ’ শব্দের অর্থ হল “মুহূর্ত” অর্থাৎ “দুর্যোগ” শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হল “খারাপ মুহূর্ত” । তাই ইংরাজি “Hazard” শব্দটির বাংলা প্রতিশব্দ হিসাবে “দুর্যোগ” শব্দটি অধিক গ্রহণ যোগ্য ।
☛ দুর্যোগের প্রকার : আকস্মিকভাবে সংঘটিত কোন প্রাকৃতিক বা মানব সৃষ্ট সুদূরপ্রসারী ঘটনাকে বলা যায় দুর্যোগ । দুর্যোগ শব্দটি বায়ুমণ্ডল, জলমণ্ডল, ভূতাত্বিক, জৈবিক ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক ভাবে সংঘটিত সুদূরপ্রসারী কোন ঘটনা ব্যখ্যা করার জন্য প্রয়োগ করা হয় । এই অর্থে দুর্যোগ বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে ।
প্রাথমিকভাবে দুর্যোগকে দুটি বৃহৎ গোত্রে বিভক্ত করা যায়, যথাঃ A) প্রাকৃতিক দুর্যোগ (Natural/Physical Hazard) ও B) মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ (Manmade/Technological Hazard) ।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে, যথাঃ i) ভূতাত্বিক দুর্যোগ (Geological or Geomorphic Hazard), ii) জলবায়ুগত ও জল সংক্রান্ত দুর্যোগ (Climatic and Hydrological Hazard), iii) পরিবেশগত দুর্যোগ (Environmental Hazards), iv) জৈবিক দুর্যোগ (Biological Hazards) ইত্যাদি;
SLST Geography হোক বা PSC Geography প্রত্যেক ক্ষেত্রে সিলেবাস অনুযায়ী টপিক ধরে ধরে সম্পূর্ণ ডিটেলস আলোচনাভিত্তিক স্টাডি ম্যাটেরিয়ালস পেতে প্রয়োজন অনুযায়ী নীচের লিঙ্কে ক্লিক করুন
আবার মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ এর প্রকারগুলি হলঃ i) পরিবেশ অবনমন (Environmental Degradation), ii) প্রযুক্তিগত দুর্ঘটনা (Technological Accidents), iii) পরিবহণ দুর্ঘটনা (Transport Accidents), iv) অর্থ-সামাজিক দুর্যোগ (Socio-Economic Hazards), v) রাজনৈতিক দুর্যোগ (Political Hazards) ইত্যাদি ।
☛ ভূতাত্বিক দুর্যোগ (Geomorphic Hazard) : ভূতাত্বিক বা ভূগাঠনিক বিভিন্ন ক্রিয়াশীল মাধ্যমগুলির প্রভাবে সৃষ্ট দুর্যোগকে বলা হয় ভূতাত্বিক দুর্যোগ । তবে এক্ষেত্রে ভূগাঠনিক বিভিন্ন ক্রিয়াশীল মাধ্যমগুলির কার্যাবলীর প্রভাবে ভূপৃষ্ঠে ভূমিরূপের পরিবর্তন সাধিত হতে হবে ।
অর্থাৎ বিস্তৃতভাবে ভূতাত্বিক দুর্যোগের সংজ্ঞা প্রসঙ্গে বলা যায় ভূতাত্বিক বা ভূগাঠনিক বিভিন্ন ক্রিয়াশীল মাধ্যমগুলির প্রভাবে ভূপৃষ্ঠের রূপের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এক ভূমিরূপ থেকে অন্য ভূমিরূপে রূপান্তরের সময় যে আকস্মিক ঘটনা বা ঘটনাগুলি কার্যকর থাকে তাকে বা তাদের একত্রে ভূতাত্বিক দুর্যোগ বলা যায় ।
R. J. Chorley (1985) এর মতে “A geomorphic hazard can be defined as any change, natural or man-induced, that may affect the geomorphic stability of a landform to the adversity of living things.”
Paul A Gares 1994 সালে প্রকাশিত তাদের “Geomorphology and natural hazards” নামক গ্রন্থে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে ভূতাত্বিক দুর্যোগকে পৃথক করার জন্য মন্তব্য করেন – “Hazards do not become geomorphic until they actually change the landscape.”
উদাহরণ হিসাবে বলা যায় ভূমিকম্প হল একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিন্তু ভূমিকম্পের ফলে যদি কোনরকম ভূমিরূপের পরিবর্তন হয় তাহলে সেই ঘটনা হল ভূতাত্বিক দুর্যোগ ।
☛ ভূতাত্বিক দুর্যোগের প্রকার : ভূতাত্বিক বা ভূগাঠনিক বিভিন্ন ক্রিয়াশীল মাধ্যমগুলির প্রভাবে সৃষ্ট দুর্যোগকে বলা হয় ভূতাত্বিক দুর্যোগ । 1996 সালে ব্রিটিশ ভূগোলবিদ Olav Slaymaker তার “Geomorphic Hazards” নামক গ্রন্থে সর্বপ্রথম তিনটি উপ-বিভাগে বিভাজিত করেন, যথাঃ i) অভ্যন্তরীণ ভূতাত্বিক দুর্যোগ (Endogenous Geomorphic Hazards), ii) বাহ্যিক ভূতাত্বিক দুর্যোগ (Exogenous Geomorphic Hazards) এবং iii) জলবায়ু ও ভূমিব্যবহার পরিবর্তনের দ্বারা ভূতাত্বিক দুর্যোগ (Climate and land-use change Geomorphic Hazards) ।
স্লেমেকারের বিভাজনের 6 বছর পর মেক্সিকোর দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ Irasema Alantara-Ayala 2002 সালে তার “Geomorphology, natural hazards, vulnerability and prevention of natural disasters in developing countries” নামক গ্রন্থে স্লেমেকারের উপবিভাগগুলিকে আরো বেশ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করেন, যথাঃ i) অভ্যন্তরীণ ভূতাত্বিক দুর্যোগ এর বিভাগগুলি হলঃ a) আগ্নেয়প্রক্রিয়া (Volcanism) ও b) নব-ভূগাঠনিক প্রক্রিয়া (Neotechtonics); ii) বাহ্যিক ভূতাত্বিক দুর্যোগ এর বিভাগগুলি হলঃ a) বন্যা (Floods), b) কার্স্ট ধ্বস (Karst Collapse), c) বরফ ধ্বস (Snow Avalanche), নালী ক্ষয় (Channel Erosion), অবক্ষেপ (Sedimentation), স্তূপ/ভর সঞ্চালন (Mass Movement), সুনামি (Tsunamis) এবং উপকূলীয় ক্ষয় (Coastal Erosion); এবং iii) জলবায়ু ও ভূমিব্যবহার পরিবর্তনের দ্বারা ভূতাত্বিক দুর্যোগ হলঃ a) মরুভূমিকরণ (Desertification), পারমাফ্রস্ট (Permafrost), অবক্ষয় (Degradation), মৃত্তিকা ক্ষয় (Soil Erosion), লবণীকরণ (Salinization) ও বন্যা (Floods) ।
☛ অভ্যন্তরীণ ভূতাত্বিক দুর্যোগ (Endogenous Geomorphic Hazards) : ভূঅভ্যন্তরীণ বিভিন্ন ক্রিয়াশীল বলের প্রভাবে উদ্ভুত দুর্যোগ যখন ভূপৃষ্ঠে ভূমিরূপের পরিবর্তন সাধন করে তখন সেই প্রকার দুর্যোগ কে অভ্যন্তরীণ ভূতাত্বিক দুর্যোগ বলা যায় । এই প্রকার দুর্যোগ ভূগর্ভস্থ বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ঘটনা যেমন পাতসঞ্চালন, চাপের পার্থক্য, লাভাপ্রবাহ, ভূপৃষ্ঠে চাপ হ্রাস ইত্যাদির প্রভাবে ঘটে থাকে ।
অভ্যন্তরীণ ভূতাত্বিক দুর্যোগ হিসাবে আগ্নেয়প্রক্রিয়া, পাত সঞ্চালন এবং ভূমিকম্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । আবার এই তিনটি বিষয় পরস্পর পরস্পরের সাথে জড়িত । পাত সঞ্চালনের ফলে একদিকে যেমন আগ্নেয়প্রক্রিয়া সংঘটিত হয় অন্যদিকে তেমন ভুমিকম্পও সংঘটিত হয় । আবার পৃথিবীর প্রধান আগ্নেয়গিরি ও ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলগুলি পাত সীমান্তে অবস্থিত ।
SLST Geography 50 Set Mock Test Series
[আপনার প্রস্তুতি ঠিক পথে চলছে কি না তা বুঝতে মক টেস্ট আরম্ভ করে এগিয়ে থাকতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ]
➣ SSC SLST GEOGRAPHY MOCK TEST SERIES : IX-X
➣ SSC SLST GEOGRAPHY MOCK TEST SERIES : XI-XII
☛ ভূতাত্বিক দুর্যোগ হিসাবে আগ্নেয়প্রক্রিয়ার গুরুত্ব : ভূঅভ্যন্তরীণ বিভিন্ন কারণে ম্যাগমা চেম্বার থেকে ম্যাগমার ভূত্বকে প্রবেশ অর্থাৎ আগ্নেয় উদ্ভেদ; বা লাভা রূপে ভূপৃষ্ঠের বাইরে নির্গমন অর্থাৎ অগ্ন্যুৎপাত এর সম্মিলিত প্রক্রিয়াকে বলা হয় আগ্নেয়প্রক্রিয়া । এই প্রক্রিয়ার ফলে ভূমিরূপের ব্যপক পরিবর্তন সাধিত হয় ।
বিশ্বে প্রায় 1500 আগ্নেয়গিরি সম্ভাব্য সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে । এই বিশাল সংখ্যক আগ্নেয়গিরির মধ্যে বছর গড়ে 50-60 টি আগ্নেয়গিরি সক্রিয় হায়ে অগ্ন্যুৎপাত ঘটায়, অর্থাৎ প্রতি সপ্তাহে বিশ্বের কোথাও না কোথাও অগ্ন্যুৎপাত ঘটছে । “Ring of Fire” অঞ্চলে বিশ্বের প্রায় 75 % আগ্নেয়গিরি অবস্থিত ।
অভ্যন্তরীণ ভূতাত্বিক দুর্যোগের এই উপাদান ভূমিরূপের যেমন পরিবর্তন ঘটায় তেমনি আবার ফলাফল স্বরূপ ব্যপক বিপর্যয় ঘটাতেও সক্ষম । আগ্নেয়প্রক্রিয়ার ফলে আগ্নেয়বিস্ফোরণ, টেফ্রা পতন, পাইরোক্লস্টিক প্রবাহ ও অবস্কর পতন, লাভা প্রবাহ, লহর ইত্যাদি বিষয়গুলি মুহূর্তে দুর্যোগ সৃষ্টি করে । এই প্রক্রিয়া একই সাথে ভূমিরূপের পরিবর্তনসাধন ও অর্থ-সামাজিক বিপর্যয় ঘটাতে সক্ষম । স্বাভাবিক গড় অবস্থায় টেফ্রা পতন 20-30 বর্গ কিঃমিঃ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে ।
☛ ভূতাত্বিক দুর্যোগ হিসাবে ভূমিকম্পের গুরুত্ব : ভূতাত্বিক দুর্যোগ হিসাবে ভূমিকম্প একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ এজেন্ট । ভূঅভ্যন্তরীণ অস্থিরতা, পাত সঞ্চালন, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ইত্যাদি বিভিন্ন প্রভাবে সৃষ্ট কম্পন ভূপৃষ্ঠেরর উপর প্রভাব বিস্তার করে ভূমিবৈচিত্র্য সংগঠনে সহায়তা করে ।
ভূমিকম্পের ফলে ভূপৃষ্ঠে ফাটল, মৃত্তিকা ধ্বস, শিলা পতন, জলোচ্ছাস, সুনামি ইত্যাদি বিষয়গুলি সংঘটিত হয়ে থাকে ।
National Earthquake Information Center (NEIC) এর তথ্য অনুযায়ী প্রতি বছর গড়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে প্রায় 20, 000 ভূমিকম্প সংঘটিত হয়, অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে 50 টি ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটছে । 1960 সালের 22 শে মে চিলি তে সংঘটিত ভুমিকম্প এখন পর্যন্ত বিশ্বের শক্তিশালী ভূমিকম্প যার ক্ষমতা ছিল 9.5 magnitude । 2004 সালের বিধ্বংসী সুনামি ছিল ভূমিকম্পের ফল ।